প্রাথমিক চিকিৎসা কাকে বলে?

প্রাথমিক চিকিৎসা মানে হলো প্রথম চিকিৎসা। এটা কে ইংরেজীতে First aid বলে।

প্রাথমিক চিকিৎসা কাকে বলে: ”যেকোনো আকস্মিক দুর্ঘটনায় প্রাথমিকভাবে হাতের কাছের জিনিস দ্বারা রোগীকে চিকিৎসা করা যাতে ডাক্তার আসার পূর্বে রোগীর অবস্থার অবনতি না ঘটে বা জটিলতা সৃষ্টি না হয় তাকে প্রাথমিক চিকিৎসা বলে।” 

প্রাথমিক চিকিৎসা (ফার্স্ট এইড) কি?

কোন দূর্ঘটনায় আহত বা অসুস্থ ব্যাক্তিকে ঘটনাস্থলেই বা এর নিকটবর্তী স্থানে যে চিকিৎসা করা হয় তাকে প্রাথমিক চিকিৎসা বা ফার্স্ট এইড বলা হয় । অনেক সময় প্রাথমিক চিকিৎসার সাহায্যে একজন রোগীকে সুস্থ করে তোলাও স্বম্ভব হয়। তাছাড়া রোগীকে স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নেয়ার আগ মুহূর্ত্ব পর্যন্ত তাকে জীবিত রাখা বা সুস্থ রাখার জন্যেও প্রাথমিক চিকিৎসা (ফার্স্ট এইড) অত্যন্ত জরুরী ।

ফার্স্ট এইড বক্স কি ?

অফিস আদালতে বা কলকারখানা প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া জন্য প্রয়োজনীয় ওষুধ পত্রসহ একটি বক্স সাজিয়ে রাখা থাকে। তাকেই ফার্স্ট এইড বক্স বলে।

ফার্স্ট এইড বক্সের প্রয়োজনীয়তা:

আকস্মিক কোন দূর্ঘটনা বা অসুস্থতার ক্ষেত্রে হাসপাতাল বা বিশেষজ্ঞ চিকিৎসা দেওয়ার জন্য প্রেরনের পূর্ব মুহুর্তে জীবন রক্ষা বা বড় ধরনের স্বাস্থ্য ঝুঁকি রোধ করার জন্য তাৎক্ষনিক যে চিকিৎসা সেবা প্রদান করা হয় তাকেই প্রাথমিক চিকিৎসা বা ফার্ষ্ট এইড চিকিকিৎসা হিসেবে চিহ্নিত করা হয় । কার্য ক্ষেত্রে বিশেষত অফিস আদালতে, শিল্প কলকারখানায় এ ধরনের ফার্স্ট এইড বক্সের ব্যবস্থা থাকার প্রয়োজনীয়তা অপরিহার্য। প্রাথমিক চিকিৎসা সরঞ্জমাদীগুলো ফার্স্ট এইড বক্সে রাখা হয়।

যে জিনিস সমুহ প্রাথমিক চিকিৎসা বক্সে থাকতে হবে:

  • আঠালো ব্যান্ডেজ/ টেপ
  • ইলাস্টিক র‌্যাপ
  • বিভিন্ন সাইজের ব্যান্ডেজ
  • প্লাস্টার রোল
  • বাটারফ্লাই ব্যান্ডেজ
  • ত্রিভুজীয় ব্যাে
  • এন্টিসেপ্টিক টিস্যু
  • ট্যাবুলার গেজ ব্যান্ডেজ– আঙ্গুলের যখমের জন্য
  • গোলাকার টিপস সহ ধারালো সেফটি পিন
  • সুচ, হ্যান্ড স্যানিটাইজার
  • তুলা, উল এবং এন্টিসেপ্টিক টিস্যুর সাথে ব্যবহৃত এন্টিসেপ্টিক লোশন
  • এন্টিবায়োটিক মলম
  • হাইড্রজেন পারঅক্সাইড
  • ল্যাটেক্স ফ্রি গ্লাভস
  • জীবানুমুক্ত ক্রিম এবং লোশন: যেমন- ডেটল, স্যাভলন
  • পেট্রোলিয়াম জেলি
  • ক্যালামাইন লোশন
  • এ্যলোভেরা জেল
  • মাসল ক্রিম এবং স্প্রে
  • স্টেরাইল গজ এবং টেপ
  • ব্যাথা নাশক
  • এন্টিহিস্টামিন- এ্যালার্জি দূরীকারক
  • ফাংগাল মেডিসিন-এন্টি ফাংগাল ক্রিম
  • ডিজিটাল থার্মোমিটার এবং জ্বরের ওষধ যেমন: এবং মৌলিক প্যারাসিটামল
  • (ফ্লাশ লাইট অথবা পেন টর্চ)

ফার্স্ট এইড বক্সে কি কি থাকে?

ফার্স্ট এইড বক্সে কি কি থাকে?

ফার্স্ট এইড বক্সে সংরক্ষিত প্রয়োজনীয় সরঞ্জমাদীর নাম ও ব্যবহার নিম্নে দেওয়া হলো:

১. ছোট আকারের জীবানুমুক্ত ব্যান্ডিজ: ছোট কাটা বা ক্ষতস্থানে ঢেকে রাখতে ব্যবস্থা করা হয়।

২. মাঝারী আকারের জীবানুমুক্ত ব্যান্ডিজ: মাঝারি আকারের কাটা বা ক্ষতস্থানে ঢেকে রাখতে ব্যবহার করা হয়। যাতে করে ময়লা ও জীবানু ক্ষতস্থানে প্রবেশ করতে না পারে।

৩. বড় আকারের জীবানুমুক্ত ব্যান্ডিজ: বড় আকারের কাটা বা ক্ষতস্থানে ঢেকে রাখতে ব্যবহার করা হয়। যাতে করে ময়লা ও জীবানু ক্ষতস্থানে প্রবেশ করতে না পারে।

৪. বড় আকারের জীবানুমুক্ত ব্যান্ডিজ (পোড়ার ক্ষেত্রে): সব ধরনের পোড়ার ক্ষেত্রে ব্যবহার করার প্রয়োজন হয়না। বিশেষ বিশেষ ক্ষেত্রে ব্যবহার করা হয়। যেমন – শরীরে বড় আকারে পুড়ে গেলে।

৫. (১/২)আউন্স জীবানুমুক্ত তুলা:  ক্ষত স্থানে জীবানু নাশক প্রয়োগ ও ক্ষতস্থানকে পরিষ্কার করা হয়।

৬. ২% আয়োডিন এলকোহলিক দ্রবন: দ্রুত ক্রিয়াশীল বিস্তৃত বর্ণনীয় জীবানু বিনাশকারী দ্রবন, যা অপরিষ্কার হাতকে জীবানুমুক্ত করে। এছাড়া অক্ষত ত্বককে জীবানুমুক্ত করার কাজে ব্যবহার করা যেতে পারে।

৭. ৪” চওড়া রোলার ব্যান্ডিজঃ মচকে যাওয়া ও ভেঙ্গে যাওয়া স্থানে শক্তভাবে বাধানোর কাজে ব্যবহার করা হয়।যাতে করে খারাপের দিকে যেতে না পারে।

৮. ২” চওড়া রোলার ব্যান্ডিজ: জীবানু মুক্ত গজ যা ক্ষত স্থানকে ঢেকে রাখতে ব্যবহার করা হয়।

৯. এডহেসিভ প্লাষ্টার: ক্ষত স্থানের উপর ব্যান্ডিজকে আটকিয়ে রাখতে ব্যবহার করা হয়।

১০. ত্রিকোণাকৃতি ব্যান্ডিজ: হাতের কনুই ভেঙ্গে গেলে বা মচকে গেলে ত্রিকোণাকৃতি ব্যান্ডিজ ব্যবহার করা হয়।

১১. সেফটি পিন:  রাবার ব্যান্ডেজের ক্ষেত্রে ইহা ব্যবহার করা হয়।

১২. রেক্টিফাইড স্প্রিট: রক্ত বন্ধ করার জন্য এবং ক্ষত স্থানকে পরিষ্কার করার ক্ষেত্রে ব্যবহার করা হয়।

১৩. টর্নিকুয়েট: রক্তপাত বন্ধ করার উপকরন হিসেবে ব্যবহার করা হয়।

১৪. বাঁেশর / কাঠের চটি: ভেঙ্গে যাওয়া বা মচকে যাওয়া স্থানে বাশের চটি দিয়ে শক্ত করে বেঁেধ দিতে হয়।

১৫. খাবার স্যালাইন: অতিরিক্ত ঘাম অথবা পাতলা পায়খানারদ্বারা পানি শূন্যতা দেখা দিলে খাবার স্যালাইন খেতে হবে।

১৬. হেক্সিসল: হাত ও অক্ষত ত্বকের উপরে ব্যবহার করা হয়।

১৭. গজের টুকরা: ক্ষত স্থানে জীবানু নাশক প্রয়োগে ব্যবহার করা হয়।

১৮. সিল ক্রিম / বার্ণ ক্রিম: পুড়ে যাওয়া অংশে লাগানো হয়।

১৯. স্যাভলন ক্রিম: ক্ষত স্থানের রক্ত ক্ষরন বন্ধ করার জন্য ব্যবহার করা হয়।

২০. পভিসেফ: ক্ষত স্থানকে জীবানু মুক্ত করার জন্য ব্যবহার করা হয়।

২১. আই ওয়াশ: চোখ পরিষ্কার করার জন্য ব্যবহার করা হয়।

২২. সার্জারিক্যাল কাঁচি: প্রাথমিক চিকিৎসায় ব্যবহারিত উপকরনাদি কাটার জন্য ব্যবহার করা হয়।

২৩. সার্জারিক্যাল হ্যান্ড গ্লাভস: কাটা ছিড়া সেলাই ও রক্ত পরিষ্কার করার জন্য ব্যবহারিত হয়।

২৪. ইলাষ্টিক / ওয়ান টাইম ব্যন্ডিজ: জীবানু থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য ব্যবহারিত হয়।

২৫. নিক্স: মাথা ব্যাথার উপশম হিসেবে ব্যবহারিত হয়।

২৬. এন্টাসিড ট্যাবলেট: গ্যাস্ট্রিকের ব্যাথা অনুভব হলে খেতে হবে।

২৭. প্রচার পত্র: আহত কিংবা অসুস্থ হলে করনীয় সম্পর্কে দিক নির্দেশনা।


আরো পড়ুন> BDIBD.COM

Leave a Comment