কম্পিউটার কাকে বলেঃ আধুনিক তথ্য যোগাযোগ প্রযুক্তির কেন্দ্রিয় টুল হলো কম্পিউটার। কম্পিউটার ছাড়া আজকের বিশ্ব কল্পনাও করা যায় না।
কম্পিউটার একটি অত্যাধুনিক ইলেকট্রনিক্স যন্ত্র। Computer শব্দটি গ্রীক শব্দ হতে এসেছে। Compute শব্দ হতেই Computer কথাটির উৎপত্তি। Computer শব্দটির আভিধানিক অর্থ গণনাযন্ত্র বা হিসেবকারী যন্ত্র।
কম্পিউটার কত প্রকারঃ
গঠন ও বৈশিষ্ট্য অনুযায়ী কম্পিউটার তিন প্রকার। যেমনঃ
১। এনালগ কম্পিউটার
২। ডিজিটাল কম্পিউটার
৩। হাইব্রিড কম্পিউটার
১। এনালগ কম্পিউটার কাকে বলেঃ
অ্যানালগ কম্পিউটার হলো এমন কম্পিউটার যা কোনো কম্পিউটিং সমস্যাকে ভৌত বৈশিষ্ট্য যেমন বৈদ্যুতিক, যান্ত্রিক, বা জলবাহী -এর ভৌত এবং চলমান পরিমাপে মডেল হিসেবে রূপ দেয়া হয়। এক কথায়, যে কম্পিউটার পরিমাপ ও পরিমানের উপর ভিত্তি করে পরিচালিত হয়, তাকে বাংলায় এনালগ কম্পিউটার বলে।
২। ডিজিটাল কম্পিউটার কাকে বলেঃ
ডিজিটাল কম্পিউটারগুলি মূলত গাণিতিক নীতিগুলির উপর ভিত্তি করে যা খুব সূক্ষ্ম এবং নির্ভুল ফলাফল সরবরাহ করতে সক্ষম। মূলত ডিজিটাল কম্পিউটারগুলি সংখ্যা প্রক্রিয়াজাতকরণের ভিত্তিতে কাজ করে। এক কথায়, একটি কম্পিউটার যা বাইনারি সিস্টেমে প্রক্রিয়া করে অর্থাৎ ০ ও ১ এর উপস্থিতির উপর ভিত্তি করে প্রক্রিয়াকরণের কাজ করে তাকে ডিজিটাল কম্পিউটার বলা হয়।
৩। হাইব্রিড কম্পিউটার কাকে বলেঃ
হাইব্রিড কম্পিউটার এমন একটি কম্পিউটার যা এনালগ এবং ডিজিটাল কম্পিউটারগুলির সর্বোত্তম বৈশিষ্ট্যগুলিকে একত্রিত করে। এটি বৈজ্ঞানিক গবেষণায়ও ব্যবহৃত হয়। সুতরাং এটি বলা যেতে পারে যে হাইব্রিড কম্পিউটার প্রযুক্তি এবং মৌলিক দিকগুলির ক্ষেত্রে এনালগ এবং ডিজিটাল কম্পিউটারের একটি আংশিক সংমিশ্রণ।
ডিজিটাল কম্পিউটার কয় প্রকার ও কি কি?
আকার-আয়তন ও ব্যহারের ভিত্তিতে ডিজিটাল কম্পিউটার ৪ প্রকার। যথা:-
১। সুপার কম্পিউটার
২। মেইনফ্রেম কম্পিউটার
৩। মিনি কম্পিউটার
৪। মাইক্রো কম্পিউটার
১। সুপার কম্পিউটার কাকে বলেঃ
সর্বাধিক শক্তিশালী এবং দ্রুততম কম্পিউটার হলো সুপার কম্পিউটার। এই কম্পিউটারটিতে অনেকগুলি জটিল এবং সূক্ষ্ম কাজ সম্পাদন করার ক্ষমতা রয়েছে। আকার এবং ক্ষমতার দিক থেকে সুপার কম্পিউটারটি বৃহত্তম কম্পিউটার। কম্পিউটারগুলি মহাকাশ এবং বৈজ্ঞানিক গবেষণা, মহাকাশযান, যুদ্ধবিমান এবং ক্ষেপণাস্ত্র নিয়ন্ত্রণে ব্যবহৃত হয়। কয়েকটি সুপার কম্পিউটার এর উদাহরন হলোঃ CRAY 1, supers xll, JAGUAR, NEBULAE, ROADRUNNER, KRAKEN, JUGENE, PLEIADES, TIANHE-1, Sunway Taihulight.
২। মেইনফ্রেম কম্পিউটার কাকে বলেঃ
সুপার কম্পিউটার থেকে তুলনামূলক কম শক্তিশালী হচ্ছে মেইনফ্রেম কম্পিউটার। কিন্তু সাধারণ কম্পিউটার থেকে মেইনফ্রেম কম্পিউটার আকারে বড় এবং অনেক শক্তিশালী । সাধারনতঃ এই কম্পিউটারকে বাণিজ্যিক কাজে বেশী ব্যবহার করা হয়। ব্যাংক, বীমা ও বড় বড় শিল্প প্রতিষ্ঠানে তথ্য আদান-প্রদান, সংরক্ষণ এবং গবেষণা কাজে মেইনফ্রেম কম্পিউটার ব্যবহার করা হয়। বাংলাদেশে ব্যবহৃত এই কম্পিউটারগুলো হলো IBM 370, IBM 9100 and IBM 4341 ইত্যাদি।
৩। মিনি কম্পিউটার কাকে বলেঃ
মিনি কম্পিউটার সাধারণ কম্পিউটারের চেয়ে আকারে বড়। এই কম্পিউটারে টার্মিনাল লাগিয়ে একসাথে প্রায় ৫০ জন ব্যবহার করা যায়। সাধারনতঃ এই কম্পিউটার গুলো শিল্প-বাণিজ্য ও গবেষণা কাজে ব্যবহার করা হয়ে থাকে। কয়েকটি মিনি কম্পিউটারের নাম যেমনঃ ibms/36, pdp-11, ncrs/9290 ইত্যাদি।
৪। মাইক্রো কম্পিউটার কাকে বলেঃ
আমরা সাধারণ ব্যবহারকারীরা যে সকল কম্পিউটার দৈনন্দিন ব্যবহার করি সেগুলোই মূলতঃ মাইক্রো কম্পিউটার। মাইক্রো মানে ক্ষুদ্র বা ছোট। মাইক্রো কম্পিউটারের অন্য আরেকটি নাম পার্সোনাল কম্পিউটার বা পিসি। মাইক্রো কম্পিউটারে থাকে মাদার বোর্ড যাতে মাইক্রোপ্রসেসর, র্যাম, রম, ইত্যাদ। এছাড়াও হার্ডডিস্ক , সিডি ড্রাইভ সহ অনেক কিছু।
মাইক্রো কম্পিউটার কত প্রকার
মাইক্রো কম্পিউটারকে আবার দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে-
১। ডেস্কটপ কম্পিউটার
২। ল্যাপটপ কম্পিউটার
১। ডেস্কটপ কম্পিউটার কাকে বলেঃ
ডেস্কটপ কম্পিউটারঃ ডেস্ক অর্থ টেবিল। টেবিলের উপর রেখে যে কম্পিউটার ব্যবহার করা যায় তাকেই ডেস্কটপ কম্পিউটার বলে। সিপিইউ, মনিটর, কী-বোর্ড, মাউস ইত্যাদি নিয়েই সাধারনতঃ ডেস্কটপ কম্পিউটার গঠিত হয়। ব্যক্তিগত ব্যবহারের জন্য এই কম্পিউটার জনপ্রিয় এবং দামও কম। কয়েকটি ডেস্কটপ কম্পিউটারের উদাহরণ হলো আইবিএমের পিসি, এ্যপলের মেকিনটোস, কমোডোর এমিগা ইত্যাদি ।
২। ল্যাপটপ কম্পিউটার কাকে বলেঃ
ল্যাপটপ কম্পিউটারঃ ল্যাপটপ অর্থ কোলের উপর। এই কম্পিউটার কোলর উপর রেখে ব্যবহার করা হয় বলে একে ল্যাপটপ কম্পিউটার বলে। তাছাড়া এই কম্পিউটার সহজে বহন করা যায় বলে খুব জনপ্রিয়। আরেকটি সুবিধা হলো এতে ব্যাটারি থাকায় বিদ্যুৎ না থাকালেও দীর্ঘসময় ব্যবহার করা যায়।
আরো পড়ুনঃ সুষম খাদ্য কাকে বলে?