সমাজ বলতে একদল লোককে বোঝায় যারা একটি নির্দিষ্ট সম্প্রদায়ের মধ্যে বসবাস করেন এবং তারা একই সংস্কৃতি মেনে চলেন।সমাজ বলতে মূলত এমন এক ব্যবস্থা বোঝায়, যেখানে একদল লোক কিছু নিয়ম-কানুন প্রতিষ্ঠা করে একত্রে বসবাসের উপযোগী পরিবেশ গড়ে তোলে।
মানুষের ক্ষেত্রে একাধিক ব্যক্তি একত্র হয়ে লিখিত কিংবা অলিখিত নিয়ম-কানুন তৈরি করে; এরকম একত্র বসবাসের অবস্থাকে সমাজ বলে। মানুষ ছাড়াও ইতর প্রাণীর ক্ষেত্রে সমাজের অস্তিত্ব দেখা যায়, তবে সেখানে মানুষের মতো কাঠামোবদ্ধ সমাজের দৃষ্টান্ত নজরে আসে না।
সমাজ কাকে বলে? বিভিন্ন মনীষীদের মতে:
সমাজবিজ্ঞানী গিডিংস এর মতে সমাজ,
“সমাজ বলতে আমরা সেই জনসাধারণকে বুঝি যারা সংঘবদ্ধভাবে কোনাে সাধারণ উদ্দেশ্য সাধনের জন্য মিলিত হয়েছে”
ম্যাকাইভার এর মতে সমাজ:
“সমাজ মানুষের বহুবিধ সম্পর্কের এক বিচিত্র রূপ”
সমাজবিজ্ঞানী কিম্বল ইয়ং এর মতে সমাজ:
”সমাজের নানা বিষয় নিয়ে প্রথমে বিজ্ঞানভিত্তিক অধ্যয়ন করেন ইবনে খালদুন”“সমাজ হলাে সামাজিক সম্পর্কের নিয়ন্ত্রণে ব্যক্তিবর্গের সাধারণ পরিচিত”
একটি সমাজের উপাদান কি কি হতে পারে:
সমাজের প্রথম ও প্রধান উপাদান হলো মানুষ। মানুষ জাতিকে কেন্দ্র করেই তার সমাজ গড়ে উঠতে সক্ষম হয়েছে। সমাজের আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হলো পরিবার। আর অনেকগুলি পরিবার নিয়েই সমাজ তৈরি হয়।
সমাজের সুস্ঠু পরিচালনার জন্যেই মানবজাতি নির্মাণ করেছে নানা ধরনের প্রতিষ্ঠানের। সমাজের মানুষের বসবাসের সুবিধার জন্য গড়ে উঠে স্কুল-কলেজ, মসজিদ, মন্দির, ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান ও অন্যান্য সামাজিক প্রতিষ্ঠান ইত্যাদি।
সমাজের প্রতি দায়িত্ব ও কর্তব্যঃ
আমাদের প্রধান দায়িত্ব হলো আমাদের বসবাসরত সমাজকে একটি আদর্শসমাজ হিসেবে পরিণত করা। আর একটি আদর্শসমাজ পরিণত করতে হলে আমাদের প্রত্যেকের মৌলিক দায়িত্ব হওয়া উচিত সর্বপ্রথম নিজেকে একজন আদর্শ ব্যক্তি হিসেবে গঠন করা। কেননা ব্যক্তি গঠনই হলো একটি আদর্শসমাজ গঠনের মূল হাতিয়ার।
সমাজ এর গুরুত্ব:
আমরা জানি, সমাজ খুবই গুরুত্বপূর্ণ কারণ এটি আমাদেরকে বিশ্বের উন্নতির জন্য একত্রে কাজ করার একটি ব্যবস্থা এবং একটি প্ল্যাটফর্ম সরবরাহ করে। সমাজের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় আমরা আমাদের জীবনযাত্রা ও সামাজিক অবস্থার উন্নতি করতে সক্ষম হয়েছি।
আমরা সম্মিলিত সামাজিক প্রচেষ্টার কারণে এগিয়ে চলেছি। তাছাড়া, সমাজে সামাজিক বিশ্বাস, নিয়ম এবং সংখ্যাগরিষ্ঠ নিয়ম রয়েছে যা মানুষকে কীভাবে আচরণ করা উচিত ও অনুচিত তা নির্ধারণ করতে সাহায্য করে।
সমাজ কিছু সুনির্ধারিত নিয়ম কানুন এর উপর ভিত্তি করে গড়ে উঠে, যার ফলে সেখানে মানুষ সহজেই বসবাস করতে পারে, একে অপরের বিপদে-আপদে এগিয়ে যায়। তাই বলা যায় সমাজ হলো সুগঠিত ও নিয়মভিত্তিক।
একটি নির্দিষ্ট অঞ্চলের জনগোষ্ঠী বড় হয়ে কি করবে বা না করবে, তাদের আচার-আচরণ কেমন হবে? এসব কিছু নির্ধারণ করে তারা কোন সমাজে বড় হচ্ছে। তাই প্রত্যেকের উচিত তাদের বসবাসরত সমাজকে একটি আদর্শ সমাজ হিসেবে গড়ে তোলা।
আরো পড়ুন> নদী কাকে বলে? আদর্শ নদীর উদাহরণ