রাজনীতি কাকে বলে?

রাজনীতি কাকে বলে: রাজনীতি (Politics) হলো এমন একটি প্রক্রিয়া যার মাধ্যমে কিছু ব্যক্তির সমন্বয়ে গঠিত কোন গোষ্ঠী সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। যাদ্বারা নাগরিক সরকারের রাজনীতিকেই বোঝানো হয়, তবে অন্যান্য অনেক সামাজিক প্রতিষ্ঠান, যেমন: শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান যেখান মানুষের মধ্যে পারস্পারিক সম্পর্ক বিদ্যমান, সেখানে রাজনীতি চর্চা করা হয়। রাজনীতি কর্তৃত্ব ও ক্ষমতার ভিত্তিতে গঠিত সামাজিক সম্পর্ক নিয়ে গঠিত।

রাষ্ট্রবিজ্ঞান হচ্ছে শিক্ষার এমন একটি শাখা যা রাজনৈতিক আচরণ শেখায় এবং ক্ষমতা গ্রহণ ও ব্যবহারের উপায় সম্পর্কে আলোচনা করে থাকে। রাজনৈতিক চিন্তার ইতিহাস খুঁজে পাওয়া যায় প্লেটোর রিপাবলিক, এরিস্টটলের রাজনীতি এবং কনফুসিয়াসের কিছু লেখনীতে।

রাজনীতির উদ্ভব মানবসভ্যতার বিকাশ এর সাথে সাথে রাজার রাজতান্ত্রিক চিন্তাধারার মধ্যে দিয়ে ঘটেছে ও পরিপূর্ণতা লাভ করেছে, রাজতান্ত্রিক চিন্তাধারা এবং রাজনৈতিক কলা কৌশল ও পরবর্তীকালের আধুনিক রাজনীতির শ্রেণী বিভাজন রাষ্ট্রবিজ্ঞানমূলক চিন্তাধারার উত্থান ঘটিয়েছে। মেকিয়াভেলী রচিত “The Prince” গ্রন্থটি রাজতন্ত্রের চরিত্র ও স্থায়ীত্ব নিয়ে বলিষ্ঠ বিশ্লেষণ করেছে । রাজনীতি হলো এককথায় এক বিশেষ রাজত্ব কেন্দ্রিক নীতি বা রাজার নীতি এটি একটা বিশেষ চেতনা বা আদর্শ। সোর্স উইকিপিডিয়া.

রাজনীতি কাকে বলে
রাজনীতি কাকে বলে

রাজনীতি বলতে সেইসব নীতিকে বলা হয় যেসব নীতি অনুসরণের মাধ্যমে  একটি জাতি বা রাষ্ট্র পরিচালিত হয়ে থাকে। সংজ্ঞা বর্ণনা করতে গেলে বলা যায় : রাজনীতি হচ্ছে এমন একটি প্রক্রিয়া যার মাধ্যমে কিছুসংখ্যক ব্যাক্তির সমন্বয়ে গঠিত একটি দল পরামর্শের মাধ্যমে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে।

সাধারণ ভাবে নাগরিক সরকার পরিচালনাকেই রাজনীতি বলা হয় তবে এছাড়াও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, গণ প্রতিষ্ঠান, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান অর্থাত যেসব স্থানে মানুষের মাঝে পারস্পরিক সম্পর্ক ও বসবাস বিদ্যমান সেখানেই রাজনীতির চর্চা হয়ে থাকে।  রাজনীতিকে অন্যভাষায় একটি যুদ্ধ হিসেবেও আখ্যায়িত করা যায়, যেখানে ক্ষমতার দ্বন্দ্ব থাকে, বুদ্ধির মারপ্যাচে অন্যকে পরাভূত করার মানসিকতা বিরাজমান থাকে, সর্বদা নিজের অবস্থানকে দৃঢ় করার মাধ্যমে সমাজ ও রাষ্ট্রে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করার তৎপরতা থাকে।

তাই সংক্ষেপে রাজনীতির সংজ্ঞা দিতে গেলে বলা যায়, “ক্ষমতা ও কর্তৃত্বের দ্বন্দ্বের সঙ্গে জড়িত অর্থাত যে সকল কাজ কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠাকে কেন্দ্র করে করা হয় তাই রাজনীতি।” কী নিয়ে রাজনীতি করা হয়? এ প্রশ্নের উত্তরে বলা যায়, মানব জীবনের নিত্যপ্রয়োজনীয় যে কোন বিষয় নিয়েই রাজনীতি করা যায়। সেটা হতে পারে, সমাজের নেতৃত্ব নিয়ে, খেলা নিয়ে, চাকরি নিয়ে, ব্যবসা নিয়ে কিংবা জমি-জমা নিয়ে। 

সমাজে নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠার জন্য রাজনীতির ময়দানে বেশ কিছু নিয়ম কানুন তৈরি আছে যার মাধ্যমে নির্বাচন প্রক্রিয়ার ভেতর দিয়ে গিয়ে কেউ সমাজে নিজের নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠা করতে পারে।  একই ভাবে খেলা বা অন্যান্য বিষয় নিয়েও রাজনীতি করা যায়। অফিসে সহকর্মীদের মধ্যে উপরে উঠার চেষ্টা-কৌশলকে অফিস রাজনীতি  বা Office politics বলে , তেমনি গ্রামে পরস্পরের মধ্যে বিভিন্ন কৌশলে নিজেকে উপরে তোলা ও নিজের কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠার লড়াইকে গ্রাম্যরাজনীতি বা  village politics বলে। 

ধর্ম কি রাজনীতির মধ্যে পড়ে? এই প্রশ্নের দুটি উত্তর হতে পারে, এক,হ্যা এবং দুই,না। প্রথম উত্তরটিই আগে দেয়া যাক,  ধর্ম রাজনীতির মধ্যে পড়ে এবং এই রাজনীতিটি অধিকাংশ সময়েই বৃহৎ পরিসরে করা হয়। মানুষের ধর্মীয় অনুভূতি কে পুঁজি করে নিজের স্বার্থ হাসিলের অপতৎপরতা যখন করা হয় তখন ধর্ম রাজনীতির মধ্যেই পড়ে।

পৃথিবীর প্রায় সব ধর্ম নিয়েই রাজনীতি করা হয়েছে এবং হচ্ছেও। দুই : না। এক্ষেত্রে বলা যায়, ধর্ম রাজনীতির মধ্যে পড়ে না, কিন্তু গোটা রাজনীতিটাই ধরে্মর মধ্যে পড়ে। যদি এমন কোন ধর্ম পাওয়া যায় যে ধর্মটি মানব জীবনের ছোট থেকে বড় সমস্ত দিক নিয়ে আলোচনা করে এবং যে ধর্মটি সব দিক থেকে পূর্ণ তাহলে সে ধর্মটির মধ্যেই পড়ে রাজনীতি। পৃথিবীতে শুধু একটি ধর্মই এমন পাওয়া যায় এবং সেটা হচ্ছে ইসলাম ধর্ম।

যে ধরে্ম মানুষের ব্যাক্তিগত, সামাজিক, অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক সকল বিষয় নিয়েই আলোচনা করা হয়েছে একেবারে বিস্তারিত। সুতরাং অন্য ধর্মগুলো রাজনীতির মধ্যে পড়লেও রাজনীতি পড়ে ইসলাম ধরে্মর মধ্যে।  আশা করি আপনার উত্তরটি দিতে পেরেছি। যদি আরো বিস্তারিত কিছু জানতে চান তাহলে কমেন্টে বলতে পারেন। ধন্যবাদ। 

আরো পড়ুনঃ ব্যবস্থাপনা কাকে বলে?

Leave a Comment