বন্যা (Flood) তুলনামূলকভাবে পানির উচ্চ প্রবাহ, যা কোন নদীর প্রাকৃতিক বা কৃত্রিম তীর অতিক্রম করে ধাবিত হয়।
বন্যা কাকে বলে: ’’পৃথিবীর স্থলভাগ জলপ্লাবিত হলে তাকে বন্যা বা বান বলা হয় । এটি এক ধরনের প্রাকৃতিক দুর্যোগ।’’
বাংলাদেশে বন্যার সংজ্ঞা
বর্ষাকালে যখন নদী-নালা, খাল, বিল, হাওর ও নিচু এলাকা ছাড়িয়ে সমস্ত জনপদ পানিতে ভেসে যায় এবং ফসল, ঘরবাড়ি, রাস্তাঘাট, সহায়-সম্পত্তির ক্ষতিসাধন করে, তখন তাকে বন্যা বলে আখ্যায়িত করা হয়।
বন্যা কেন হয়?
বাংলাদেশ নদীমাতৃক দেশ ৷ এদেশের বড় বড় নদী যেমন পদ্মা, মেঘনা, যমুনা, ব্রহ্মপুত্রর দু’কূল ছাপিয়ে অনেক সময়ই বন্যার সৃষ্টি হয়৷ যে কারণে এখানে বন্যা হয়। প্রচুর বৃষ্টিপাত,পলি সঞ্চয়নের ফলে নদনদীর তলদেশ ভরাট হয়ে যাওয়া, পাহাড়ি ঢল, নদীর বাঁধ ভেঙ্গে গেলে, বড় বড় নদীর গভীরতা কমে আসলে, সমুদ্রের পানির স্তর বেড়ে গেলে, বড় বড় নদীর পানি বেড়ে গেলে, অপরিকল্পিতভাবে বাড়িঘর ও রাস্তাঘাট তৈরি, ছোট ছোট খাল-বিল, হাওর, পুকুর ভরাট হয়ে যাওয়া,হিমালয়ে তুষার গলন এবং হিমবাহের স্থানান্তর সংঘটন; ভূমিকম্পের ফলে কখনো কখনো বন্যা দেখা দেয়৷
বাংলাদেশে সংঘটিত বন্যাকে তিনটি শ্রেণিতে বিভক্ত করা হয়:
১। মৌসুমি বন্যা
২। আকস্মিক বন্যা
৩। জোয়ারসৃষ্ট বন্যা
১। মৌসুমি বন্যা (monsoon flood)
এই বন্যা ঋতুগত। নদনদীর পানি ধীরে ধীরে উঠানামা করে এবং বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত করে জানমালের ব্যাপক ক্ষতি সাধন করে। মৌসুমি বন্যা স্বাধারনত (জুন থেকে সেপ্টেম্বর) মাসে হয়ে থাকে।
২। আকস্মিক বন্যা (flash flood)
আকস্মিক পাহাড়ি ঢল অথবা স্বল্প সময়ে সংঘটিত প্রবল বৃষ্টিপাত থেকে কিংবা প্রাকৃতিক অথবা মানবসৃষ্ট বাঁধ ভেঙে সংঘটিত হয়।
৩। জোয়ারসৃষ্ট বন্যা (tidal flood)
সংক্ষিপ্ত স্থিতিকাল বিশিষ্ট এই বন্যার উচ্চতা সাধারণত ৩ থেকে ৬ মিটার পর্যন্ত হয়ে থাকে এবং ভূভাগের নিষ্কাশন প্রণালীকে আবদ্ধ করে ফেলে।
আরো পড়ুন> নদী কাকে বলে? আদর্শ নদীর উদাহরণ