কৃষি কি ? বা কৃষি কাকে বলে?

কৃষি: মানুষের জীবনের চালিকাশক্তি

কৃষি হলো মানুষের প্রাচীনতম পেশা। প্রাচীনকালে মানুষ খাবারের জন্য ফল, শাকসবজি এবং বীজ সংগ্রহ করত। ধীরে ধীরে তারা বীজ সংগ্রহ করে এবং সেগুলো থেকে চারা উৎপাদন করে সেগুলো চাষ করতে শিখল। এভাবেই কৃষি শুরু হয়।

কৃষি কী?

কৃষি হলো প্রাকৃতিক সম্পদের সঠিক ব্যবহারের মাধ্যমে বিভিন্ন ফসল, ফলমূল, শাকসবজি, গবাদি পশু, মৎস্য, পশুপাখি, মধু ইত্যাদি উৎপাদনের বিজ্ঞানসম্মত পদ্ধতি।

কৃষি কীভাবে শুরু হয়েছিল?

কৃষি মানুষের প্রাচীনতম পেশা। ধারণা করা হয় যে, প্রায় ১০,০০০ বছর আগে মধ্যপ্রাচ্য অঞ্চলে কৃষি শুরু হয়েছিল। প্রাথমিকভাবে মানুষ খাবারের জন্য ফল, শাকসবজি এবং বীজ সংগ্রহ করত। ধীরে ধীরে তারা বীজ সংগ্রহ করে এবং সেগুলো থেকে চারা উৎপাদন করে সেগুলো চাষ করতে শিখল। এভাবেই কৃষি শুরু হয়।

কৃষির গুরুত্ব

কৃষি মানুষের জীবনে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কৃষি থেকে প্রাপ্ত খাদ্য মানুষের বেঁচে থাকার জন্য অপরিহার্য। কৃষি থেকে প্রাপ্ত পশুপাখির মাংস, দুধ, ডিম, চামড়া, পশম ইত্যাদি মানুষের জীবনযাত্রার মান উন্নত করে। কৃষি থেকে প্রাপ্ত কাঁচামাল শিল্পের জন্যও গুরুত্বপূর্ণ।

কৃষির প্রধান শাখা

কৃষি প্রধানত দুটি ভাগে বিভক্ত:

  • কৃষি
  • পশুপালন

কৃষি

কৃষি হলো ফসল, ফলমূল, শাকসবজি ইত্যাদি উদ্ভিদ উৎপাদনের বিজ্ঞানসম্মত পদ্ধতি। কৃষি প্রধানত দুটি ভাগে বিভক্ত:

  • ফসল চাষ
  • ফলমূল চাষ
  • শাকসবজি চাষ

ফসল চাষ

ফসল চাষ হলো বিভিন্ন ধরনের শস্য উৎপাদনের বিজ্ঞানসম্মত পদ্ধতি। ফসল চাষের প্রধান উদ্দেশ্য হলো খাদ্য, আচ্ছাদন, জ্বালানি, ওষুধ ইত্যাদির জন্য প্রয়োজনীয় কাঁচামাল উৎপাদন করা।

বাংলাদেশে ফসল চাষের প্রধান শস্যগুলি হলো:

  • ধান
  • গম
  • চাল
  • ডাল
  • তেলবীজ
  • কাপড়ের ফসল
  • মশলা

ফলমূল চাষ

ফলমূল চাষ হলো বিভিন্ন ধরনের ফল উৎপাদনের বিজ্ঞানসম্মত পদ্ধতি। ফলমূল চাষের প্রধান উদ্দেশ্য হলো মানুষের খাদ্য ও পুষ্টির চাহিদা পূরণ করা।

বাংলাদেশে ফলমূল চাষের প্রধান ফলগুলি হলো:

  • আম
  • কাঁঠাল
  • নারকেল
  • পেঁপে
  • আনারস
  • লিচু
  • বরই

শাকসবজি চাষ

শাকসবজি চাষ হলো বিভিন্ন ধরনের শাকসবজি উৎপাদনের বিজ্ঞানসম্মত পদ্ধতি। শাকসবজি চাষের প্রধান উদ্দেশ্য হলো মানুষের খাদ্য ও পুষ্টির চাহিদা পূরণ করা।

বাংলাদেশে শাকসবজি চাষের প্রধান শাকসবজিগুলি হলো:

  • পালং শাক
  • লাউ
  • টমেটো
  • বেগুন
  • কাঁচকলা
  • আলু
  • পেঁয়াজ

পশুপালন

পশুপালন হলো গবাদি পশু, মৎস্য, হাঁস-মুরগি, মৌমাছি ইত্যাদি প্রাণী উৎপাদনের বিজ্ঞানসম্মত পদ্ধতি। পশুপালন প্রধানত দুটি ভাগে বিভক্ত:

  • গবাদি পশু পালন
  • মৎস্য চাষ
  • হাঁস-মুরগি পালন

গবাদি পশু পালন

গবাদি পশু পালন হলো গরু, মহিষ, ছাগল, ভেড়া, ইত্যাদি গবাদি পশু উৎপাদনের বিজ্ঞানসম্মত পদ্ধতি। গবাদি পশু পালনের প্রধান উদ্দেশ্য হলো মাংস, দুধ, চামড়া, পশম ইত্যাদি উৎপাদন করা।

বাংলাদেশে গবাদি পশু পালনের প্রধান গবাদি পশুগুলি হলো:

  • গরু
  • মহিষ
  • ছাগল
  • ভেড়া

মৎস্য চাষ

মৎস্য চাষ হলো বিভিন্ন ধরনের মাছ উৎপাদনের বিজ্ঞানসম্মত পদ্ধতি। মৎস্য চাষের প্রধান উদ্দেশ্য হলো মানুষের খাদ্যের চাহিদা পূরণ করা।

বাংলাদেশে মৎস্য চাষের প্রধান মাছগুলি হলো:

  • রুই
  • কাতলা
  • মৃগেল
  • সিলভার কার্প
  • কার্প
  • কৈতল
  • পুঁটি

হাঁস-মুরগি পালন

হাঁস-মুরগি পালন হলো হাঁস, মুরগি, কবুতরের মতো পশুপাখি উৎপাদনের বিজ্ঞানসম্মত পদ্ধতি। হাঁস-মুরগি পালনের প্রধান উদ্দেশ্য হলো মাংস, ডিম, পালক, ইত্যাদি উৎপাদন করা।

বাংলাদেশে হাঁস-মুরগি পালনের প্রধান পশুপাখিগুলি হলো:

  • হাঁস
  • মুরগি
  • কবুতরের

কৃষি উন্নয়নের উপায়

কৃষি উন্নয়নের জন্য নিম্নলিখিত পদক্ষেপগুলি গ্রহণ করা যেতে পারে:

  • কৃষি গবেষণা ও প্রযুক্তি উদ্ভাবন
  • কৃষি উপকরণের উৎপাদন ও সরবরাহ বৃদ্ধি
  • কৃষি শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ
  • কৃষি সম্প্রসারণ ও সহায়তা
  • কৃষি ঋণ ও আর্থিক সহায়তা
  • কৃষি বিপণন ও বাজারজাতকরণ

উপসংহার

কৃষি মানুষের জীবনের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কৃষি উন্নয়নের মাধ্যমে আমাদের দেশের অর্থনীতিকে শক্তিশালী করা সম্ভব।

কৃষি উন্নয়নের ক্ষেত্রে আরও কিছু পদক্ষেপ নিতে পারে:

  • কৃষি জমির উর্বরতা বৃদ্ধির পদক্ষেপ গ্রহণ করা যেতে পারে।
  • কৃষিক্ষেত্রে যান্ত্রিকীকরণ ও আধুনিক প্রযুক্তি প্রয়োগের মাধ্যমে উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি করা যেতে পারে।
  • কৃষিজাত পণ্যের বাজারজাতকরণে সহায়তা প্রদান করা যেতে পারে।
  • কৃষি খাতের জন্য বিশেষ সুযোগ-সুবিধা প্রদান করা যেতে পারে।

কৃষি উন্নয়নের মাধ্যমে আমরা একটি টেকসই ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ে তুলতে পারি।

আরো পড়ুনঃ উদ্ভিদ কাকে বলে?

Leave a Comment